কয়েকটি বড় কবিরা গুনাহ যা আমাদের যেনে নেওয়া উচিত
ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ : প্রথমত গুনাহ দুই ধরনের- ১. কবিরা, ২. সগিরা। আল্লাহপাক এবং রসুল (সা.) যেসব গুনাহের ব্যাপারে কোনো শাস্তি আরোপ করেছেন এবং স্পষ্টভাবে তা বারণ করেছেন, তা-ই হলো কবিরা গুনাহ। তবে কবিরা গুনাহের মধ্যেও রয়েছে বিভিন্ন স্তর। কোনো কোনো কবিরা গুনাহ আল্লাহপাকের সত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত, আবার কোনোটা বান্দার সঙ্গে সম্পর্কিত। নিচে গুরুতর কয়েকটি কবিরা গুনাহ তুলে ধরা হলো :
১. শিরক করা : কবিরা গুনাহের স্তরে এটি সবচেয়ে ভয়ঙ্কর এবং স্পর্শকাতর। আল্লাহপাকের সত্তা, গুণাবলি ও কার্যাবলিতে অন্য কাউকে শরিক করা বা সমকক্ষ জ্ঞান করাই শিরক। যেমন— আল্লাহর কাছে মোনাজাত করার মতো জীবিত বা মৃত কারো কাছে প্রার্থনা করা। কবর বা মাজারে সেজদা করা, কোনো ব্যক্তিসমষ্টি বা সংগঠককে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে বিশ্বাস করা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আল্লাহকে ছাড়া এমন কাউকে ডাকবে না যে তোমার কোনো উপকার করতে পারে না, ক্ষতিও করতে পারে না। তারপরও যদি তুমি এ কাজ করো, তাহলে তুমি জালেমদের মধ্যে গণ্য হবে (সুরা ইউনুস, আয়াত : ১০৬)। অন্য একটি আয়াতে আল্লাহপাক আরো বলেছেন, যে আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৩১২)।
২. সুদ খাওয়া : সুদ বলা হয় বিনিময়বিহীন অতিরিক্ত কিছু গ্রহণ করাকে। ইসলাম এবং ইসলামী শরিয়ত শোষণ, জুলুম, নির্যাতন ও মনুষ্যত্বহীনতার পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত। সম্পদের ব্যবহার ও ভোগের ক্ষেত্রে ইসলাম দিয়েছে ব্যাপক অধিকার। কিন্তু যে ভোগের কারণে সমাজের অন্যজন নির্যাতিত হয় এবং শিকার হয় দুঃখ-কষ্টের, সেই ভোগকে ইসলাম হারাম করে দিয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ বিক্রিকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা, আয়াত ২৭৫)। ব্যবসা-বাণিজ্য যেহেতু মানবিক সাম্য ও অর্থনৈতিক ইনসাফ প্রতিষ্ঠার মাধ্যম, তাই ইসলামী শরিয়ত তা গ্রহণ করেছে। আর সুদ যেহেতু মানবতাবিরোধী শোষণমূলক লেনদেন, তাই ইসলাম তাকে হারাম ঘোষণা করেছে।
৩. আহলে এলমকে অবজ্ঞা করা : আহলে এলম বলা হয় যারা কোরআন ও হাদিসের ব্যুৎপত্তি অর্জন করে এবং সে অনুযায়ী আমল করে। কোরআন-হাদিস যেমন সম্মানিত, এর সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিটি ব্যক্তি এবং বস্তুও তেমনি সম্মানিত। একপ্রস্থ কাপড় দিয়ে যখন কোনো জামা তৈরি করা হয় তখন এর সম্মান এবং মূল্য যতটুকু হয়, পবিত্র কোরআনুল করিমের সামান্য গিলাফটির মূল্য তার চেয়ে শতগুণ বেশি হয়। আর এটাই ঈমানের দাবি। আল্লাহপাক আহলে এলম সম্পর্কে কোরআনপাকে বর্ণনা করেন, হে নবী আপনি বলুন! যারা প্রাজ্ঞ আর যারা অপ্রাজ্ঞ, তারা কি সমান হতে পারে? (জুমার : ৯)
No comments